করোনা ভাইরাসের কারণে দীর্ঘ ৭৫ দিন আমদানি-রফতানি বাণিজ্য বন্ধ থাকার পরে বেনাপোল বন্দর দিয়ে পুনরায় দুই দেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য শুরু হয়েছে। সোমবার (৮জুন) থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এ বাণিজ্য শুরু হয়।
বৃহস্পতিবার ও রবিবার দুই দেশের প্রশাসন ও ব্যবসায়ী নেতাদের সাথে পৃথক দু‘টি বৈঠকের পর বেনাপোল-পেট্রাপোল স্থলবন্দর দিয়ে দুই দেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য শুরু হয়েছে।
তবে দাপ্তরিকভাবে দুই দেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য শুরু হলেও বাস্তবে শুধু আমদানি হচ্ছে। রপ্তানি হচ্ছে না। সোমবার রাতে এ বন্দর দিয়ে ২৪ টি পণ্যবাহী ট্রাক ভারত থেকে বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করবে।
করোনা ভাইরাসের কারণে গত ২৩ মার্চ থেকে বেনাপোল-পেট্রাপোল স্থলবন্দর দিয়ে দুই দেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ হয়ে যায়। এরপর ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার ২৪ এপ্রিল আমদানি-রপ্তানি চালুর অনুমোদন দিয়ে থাকলেও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অনুমতি না থাকায় দীর্ঘদিন সড়কপথে বন্ধ ছিল ভারত-বাংলাদেশের বাণিজ্য।
ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার বারবার চিঠি দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে স্থলবন্দর দিয়ে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য শুরুর অনুমতি দেওয়ার অনুরোধ করলেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তার সিদ্ধান্তে অনড় ছিলেন। এছাড়াও বনগাঁর সিন্ডিকেটের কারণেও বাণিজ্যে জটিলতা দেখা দেয়। পরে রেলওয়ের মাধ্যমে পণ্য আমদানির অনুমতি দেওয়ায় স্থলপথে আমদানি-রপ্তানির ওপর চাপ সৃষ্টি করে ভারতের পেট্রাপোল বন্দর এলাকার শ্রমিকসহ ট্রাক মালিক ও চালকরা। বাধ্য হয়ে তড়িঘড়ি করে বৈঠকে বসে আমদানি-রপ্তানি চালু করতে রাজি হয় ভারতের প্রশাসনসহ বনগাঁ সিন্ডিকেট।
আরো পড়ুন: করোনা নিয়ন্ত্রণে: ঘোষণা কিউবার
করোনার সংক্রমণ নিয়ে আশঙ্কা থাকায় সীমান্ত অতিক্রমের আগেই গাড়ি চালকদের শারীরিক অবস্থার পরীক্ষা করা হচ্ছে। এছাড়াও ট্রাকগুলো উভয় দেশে স্যানিটাইজ করে বাংলাদেশে পাঠানো হচ্ছে। ফেরার সময়ও চালকদের শারীরিক পরীক্ষা করা হচ্ছে।
প্রতিবছর এ বন্দর দিয়ে প্রায় ৮০ হাজার মে. টন পণ্য আমদানি হয়। যা থেকে সরকার প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আয় করে থাকে এ বন্দর থেকে। আমদানি পণ্যের মধ্যে গার্মেন্টস সামগ্রী, তৈরি পোশাক, শিল্পকারখানা ও ওষুধ শিল্পের কাঁচামাল, শিল্প প্রতিষ্ঠানের মূলধনী যন্ত্রপাতি, কেমিক্যাল, খাদ্যদ্রব্য, চাল, পেঁয়াজ, তুলা, বাস, ট্রাক ট্যাসিস, মোটরসাইকেল এবং পার্টস ও টায়ার রয়েছে। রফতানি পণ্যের মধ্যে পাট ও পাটজাত দ্রব্য, সাদা মাছ, ব্যাটারি, ওভেন গার্মেন্টস, নিটেড গার্মেন্টস, নিটেড ফেব্রিকস ও কর্টন র্যাগস (বর্জ কাপড়) উল্লেখযোগ্য।
ইত্তেফাক/এএএম