রংপুরের মর্ডান মোড়ে অবস্থিত আজাদ হেটেল এন্ড রেস্তোরায় প্রতিবন্ধী কর্মচারীকে চুরির অপবাদ দিয়ে নির্যাতনের অভিযোগে পুলিশ ওই হোটেল মালিকে গ্রেফতার করেছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে মধ্যযুগীয় কায়দায় বর্বর নির্যাতনের শিকার বাবর আলী বাবুকে (২৫) পুলিশ উদ্ধার করে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেছে।
এ ঘটনায় রংপুর জেলা হোটেল ও রেস্তোরা শ্রমিকলীগ ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। ঘটনার সাথে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার ন্যায় বিচার দাবি জানিয়ে তাজহাট থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে।
জানা গেছে, রংপুর মহানগরীর তাজহাট থানা এলাকার মর্ডান মোড়ে অবস্থিত আজাদ হোটেল এন্ড রেস্তোরা। প্রতিবন্ধী কর্মচারী বাবর আলী বাবুকে গত ৮ জুন রাত আটটার দিকে আজাদ হোটেলের মালিক আনছার আলী, তার ছেলে আজাদ মিলে চুরির অপবাদ দিয়ে হোটেলের ভেতরে আটকে রেখে মধ্যযুগীয় কায়দায় বর্বর নির্যাতন করে।
নির্যাতনে ব্যবহার করা হয় হাতুর, প্লাস, লোহার শিক (রড) গরম করে ছ্যাকা দেয় শরীরের বিভিন্ন স্থানে। বাবুর শরীর ক্ষত-বিক্ষত রক্তাক্ত করা হয়। স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দিলে তাজহাট থানা পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। বাবু বর্তমানে চিকিৎসাধীনে আছে।
আরো পড়ুন: চালুর ৫ ঘণ্টার মধ্যে বন্ধ বুড়িমারী স্থলবন্দর
হোটেল মালিক আনছার আলী জানান, করোনা ভাইরাস কারণে লকডাউন হলে হোটেল বন্ধ রাখা হয়। এসময় বাবুকে হোটেল দেখাশুনার দায়িত্ব দিয়ে চাবি দেওয়া হয়েছিল। প্রায় ২মাস পর লকডাউন শিথিল হলে ২৯ এপ্রিল হোটেল খোলা হয়। এসময় দেখা যায়, ২টা গ্যাস সিলিন্ডার, চুলা ৩টা, সিসিটিভি ক্যামেরা সেট ৩টা, মিষ্টির মেলামাইন ট্রে ৮টা, ডিজিটাল পালা ১টা, ডিজিটাল দেয়াল ঘড়ি ১টা, সিলিং ফ্যান ১টা, ১ হর্স মোটর ২টি, গ্রীজার মেশিন ১টিসহ সর্বমোট অর্ধলাখ টাকার মালামাল চুরি হয়ে গেছে। এ ব্যাপারে তাজহাট থানায় অভিযোগ দেওয়া আছে। আমরা চোরকে ধরে রেখেছিলাম। পুলিশ ডেকে তুলে দিয়েছিলাম। বিষয়টি পুলিশ গুরুত্ব সহকারে না নিয়ে বরং চোরকে ছেড়ে দেয়। যে কারণে চোরকে পেটাতে আমরা বাধ্য হয়েছি।
তাজহাট থানার ওসি (তদন্ত) মামুন জানান, ঘটনাস্থলে গিয়ে বাবুকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাই। ঘটনার বিষয়ে তদন্ত চলছে। পরবর্তীতে এ ব্যাপারে মামলা দায়ের হয়েছে।
রংপুর হোটেল রেস্তোরা শ্রমিকলীগ সভাপতি সমশের আলী জানান, আমরা সংগঠনের পক্ষ থেকে পৃথকভাবে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি। বাবুর ওপর নির্যাতনকারীদের আইন আমলে নিয়ে যথাযথ শাস্তি ও ক্ষতিপূরণ না হলে প্রয়োজনে আন্দোলনে নামবো।
ইত্তেফাক/এএএম