জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার শুয়াকৈর গ্রামের ঝিনাই নদীর ওপর নির্মিত ২০০ মিটার সেতুর একাংশ বন্যার পানির স্রোতে ভেসে গেছে।
মঙ্গলবার (২১ জুলাই) মধ্যরাতে সেতুর মাঝ বরাবর অংশ বিলিন হয়ে যায়। এতে দুর্ভোগের সম্মুখীন হলো ১৫টি গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ। সেতুর ওপারে শুয়াকৈর গ্রামের বাসিন্দা উপজেলা যুবলীগের সভাপতি এ কে এম আশরাফুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার রাত ১.৪৫টার দিকে সেতুর দুইটি স্প্যানসহ মাঝখানের বিরাট একটি অংশ নদীগর্ভে হারিয়ে যায়। খবর পেয়ে রাতেই শত শত মানুষ ভিড় জমায় এবং অনেকে হাউমাউ করে কান্নাকাটি করে।
তিনি আরো জানান, ব্রিজটি ভেঙে পড়ায় শুয়াকৈর, চর হেলেঞ্চাবাড়ি, শিশুয়া চর, ছাতারিয়া, সিঙ্গুরিয়া, চুনিয়াপটল, হাটবাড়ি, ডিক্রি পাঁচবাড়ি, রৌহা, নান্দিনা, বড়বাড়িয়া একাংশ, পাঁচবাড়ী ডিগ্রিসহ ১৫টি গ্রামের মানুষের উপজেলা সদরের সঙ্গে সরাসরি চলাচল বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। ব্রিজ দিয়ে যেখানে মাত্র ৫ মিনিট লাগে সেখানে এখন নদী পার হতে ঘণ্টার বেশি সময় লাগবে।
সূত্র জানায়, এলজিইডির বাস্তবায়নে ২০০৬ সালে উপজেলার কামরাবাদ ইউনিয়নের শুয়াকৈর শাহ্জাদা হাট সংলগ্ন হদুর মোড় এলাকার ঝিনাই নদীর ওপর ২০০ মিটার দৈর্ঘের সেতুটি নির্মিত হয়। মঙ্গলবার সকালে বন্যার পানির তীব্র স্রোতে ঐ ব্রিজের মাঝামাঝি প্রায় ২০ মিটার দৈর্ঘ্যের ২টি গার্ডারসহ ২টি পিলার প্রায় ১ ফুট নিচের দিকে দেবে যায়। ঐদিনই দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিহাব উদ্দিন আহমদ, উপজেলা প্রকৌশলী রাকিব হাসান ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা হুমায়ূন কবীর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ব্রিজে মানুষ ও যান চলাচল নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন। তারপর মধ্যরাতে ব্রিজের ভাঙা অংশ নদীতে নিমজ্জিত হয়।
অভিযোগ রয়েছে, নদীতে অসাধু বালু ব্যবসায়ীরা বারবার অবৈধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করায় নদীর গতিপথ পরিবর্তন ও নদীর পাড় ভাঙনের শিকার হয়। এতে ব্রিজ দুর্বল হয়ে পড়ে। বন্যার স্রোতে ব্রিজটি দাঁড়িয়ে থাকতে না পারায় তা ধসে যায়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিহাব উদ্দিন আহমদ জানান, সংশ্লিষ্ট প্রকৌশল বিভাগের সঙ্গে কথা বলে কী করা যায় বিষয়টি ভাবা হচ্ছে।
ইত্তেফাক/এমএএম
সূত্রঃ দৈনিক ইত্তেফাক