করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অন্যরকম এক দৃষ্টান্ত তৈরি করছেন ১০৩ বছর বয়সি বেলজিয়ামের এক চিকিত্সক। বয়সের বাধাকে তুড়ি মেরে করোনা গবেষণার তহবিল সংগ্রহের জন্য তিনি নাম লিখিয়েছেন ম্যারাথন হাঁটায়। নিজের বাগানের চারপাশে প্রতিদিন হাঁটছেন তিনি।
নাম তার আলফনস লিম্পোয়েলস। পহেলা জুন তিনি ৪২ দশমিক ২ কিলোমিটার যাত্রা শুরু করেন উত্তর-পূর্ব ব্রাসেলসের রটসেলার পৌর এলাকায়। আগামী ৩০ জুনে হাঁটা শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে তার। প্রতিদিন সকাল, দুপুর ও সন্ধ্যা মিলে ১০ পাকে ১৪৫ মিটার (১৫৯ গজ) হাঁটেন লিম্পোয়েলস। হাঁটার গণনা যাতে ভুলে না যান, সেজন্য প্রতিবার এক পাক হাঁটা শেষ হলেই একটি বাটিতে একটা করে কাঠি ফেলেন তিনি।
লিম্পোয়েলস জানান, হেঁটে অর্থ জোগাড়ের এই ধারণা তার মাথায় আসে ব্রিটিশ নাগরিক দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের যোদ্ধা ১০০ বছর বয়সি টম মুরকে দেখে। দেশের স্বাস্থ্যসেবার জন্য অর্থ সংগ্রহ করতে তিনিও তার বাগানে এভাবে হাঁটা শুরু করেছিলেন। এ প্রচেষ্টায় মুর ৪ কোটির বেশি মার্কিন ডলার সংগ্রহ করতে পেরেছিলেন। লিম্পোয়েলস বলেন, ‘আমার সন্তানরা বলেছিল, টম মুরের মতো আমিও তো হাঁটতে পারি। বয়স ১০৩ তো কি হয়েছে! তারাই আমাকে কিছু করার পরামর্শ দেয়। আমার নাতনি ম্যারাথনে দৌড়েছিল। আমি তাকে মজা করে বলেছিলাম, আমিও ম্যারাথনে দৌড়াব।’
লিম্পোয়েলস স্থানীয় লিউভেন বিশ্ববিদ্যালয় লাগোয়া একটি হাসপাতালের জন্য তহবিল সংগ্রহ করতে ম্যারাথন হাঁটছেন। সেখানে গবেষকরা কোভিড-১৯ নিরাময়ের পথ খুঁজতে গবেষণা চালাচ্ছেন। লিম্পোয়েলস এখন পর্যন্ত ৬০০০ ইউরো জোগাড় করতে পেরেছেন এবং ম্যারাথনের এক-তৃতীয়াংশ পথ হাঁটা শেষ করেছেন বলে লিউভেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
করোনার ভয়বহতা দেখে লিম্পোয়েলসের স্মৃতিতে উঠে এসেছে ১৯৫৭-৫৮ সালের এশিয়ান ফ্লু মহামারির প্রেক্ষাপট। তার কথায়, সেই মহামারির ভয়াবহতা আজকের করোনা ভাইরাসের মতো ছিল না। ওই সময় মানুষ অসুস্থ হলেও আজ যারা করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত তাদের চেয়ে অনেক দ্রুত সেরে উঠেছিলেন। তিনি বলেন, ‘একজন চিকিত্সক হিসাবে এ বিষয়টি আপনাকে নাড়া দেবে। আর এ কারণেই আমি এখন খুশি যে, করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কিছুটা হলেও হয়তো অবদান রাখতে পারব।’ রয়টার্স।