করোনা ভাইরাস মহামারি কারণে সৃষ্ট বর্তমান চ্যালেঞ্জগুলোকে সুযোগে রূপান্তরিত করা পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। করোনার মহামারিতে বিশ্বব্যাপী চরম বিপর্যয়ে পড়েছেন মানুষ। তবে বাংলাদেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে সঠিক পথে রাখতে চ্যালেঞ্জগুলোকে সুযোগের পরিণত করার নীতিকে অনুসরণ করা উচিত।
কসমস সংলাপের অংশ হিসেবে শুক্রবার দেশে-বিদেশে অবস্থানরত বিশেষজ্ঞদের নিয়ে ‘ইমপ্যাক্ট অব কোভিড-১৯ অন বাংলাদেশ: প্রগনোসিস ফর রিকভারি’ শীর্ষক এ ওয়েবিনারের আয়োজন করে কসমস গ্রুপের জনহিতকর প্রতিষ্ঠান কসমস ফাউন্ডেশন। ভার্চুয়াল বৈঠকে বিশেষজ্ঞরা এসব মন্তব্য করেন।
ধীরে ধীরে এ পরিস্থিতির পুনরুদ্ধার হবে উল্লেখ করে সভাপতির বক্তব্যে ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুরের ইনস্টিটিউট অব সাউথ এশিয়ান স্টাডিজের (আইএসএএস) প্রিন্সিপাল রিসার্চ ফেলো ড. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী বলেন, এটি সতিই বিশ্বব্যাপী একটি বিপর্যয়। এটি এক পাহাড়, যা আমাদের আরোহণ করতে হবে। আর যৌথ প্রচেষ্টার মাধ্যমে চ্যালেঞ্জগুলোকে সুযোগে রূপান্তরিত করার ওপর জোর দিতে হবে।
ওয়েবিনারে প্যানেল আলোচক হিসেবে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ড. জায়েদী সাত্তার বলেন, এটি বিশ্বব্যাপী মহামারি এবং বাংলাদেশ সরকার কোনো সময় নষ্ট না করেই এতে খুব দ্রুত সাড়া দিয়েছিল। এখন অনেক বেশি আর্থিক সংস্থান এবং নগদ টাকা স্থানান্তরের প্রয়োজন হবে, কারণ অনেক মানুষের তা প্রয়োজন হবে, যাতে ‘নীতিনির্ধারকরা তাদের যথাসাধ্য চেষ্টা করছেন। বৈশ্বিক ও আঞ্চলিকভাবে কী চলছে তা দেখা দরকার।
জায়েদী সাত্তার রপ্তানি বৈচিত্র্য, আরও বিনিয়োগ এবং সংশ্লিষ্ট খাতের জন্য ভারসাম্যমূলক প্রণোদনা নিশ্চিত করার ওপর জোর দেন।
বিজিএমইএ সভাপতি ড. রুবানা হক ড. রুবানা বলেন, এটি প্রায় দুঃস্বপ্নের মতো ছিল এবং ৩.১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের তৈরি পোশাক রপ্তানি আদেশ বাতিল বা স্থগিত হয়ে যাওয়ার পর তাদের যাত্রা খুবই সংকটপূর্ণ ছিল।
এক প্রশ্নের জবাবে বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাতিল বা স্থগিত হওয়া আদেশের প্রায় ৪৮ শতাংশ তারা পুনরুদ্ধার করেছেন, তবে অর্থ প্রদানের শর্ত এখনও অস্পষ্ট।
জাতিসংঘের পরিসংখ্যান উদ্ধৃত করে বাংলাদেশ ও অন্যান্য দেশের মধ্যে শিক্ষাগত ঘাটতির কথা তুলে ধরে ডিজিটাল বিভাজন কমিয়ে আনার আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষাবিদ ও প্রখ্যাত সমাজকর্মী রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, ‘এর জন্য একটি পুনরুদ্ধার পরিকল্পনা প্রয়োজন। বিনিয়োগ থাকতে হবে এবং আমাদের ডিজিটাল বিভাজন কমিয়ে আনতে হবে।’
ড. রাশেদা আরও বলেন, করোনা মহামারির কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ার পরে টেলিভিশন পাঠ, অনলাইন ক্লাস, রেডিও সম্প্রচার এবং মোবাইল ডিভাইসের মাধ্যমে সরকার শিক্ষার ক্ষতি হ্রাস করার চেষ্টা করছে। আমরা নারী ও জাতিগত সংখ্যালঘুসহ বিপুল সংখ্যক পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছাতে পারিনি।
আরও পড়ুন: গাজায় হামাসের অবস্থান লক্ষ্য করে ইসরাইলের বিমান হামলা
শিক্ষামূলক কার্যক্রমের অভাবে বাংলাদেশ ভয়াবহ পরিণতির মুখোমুখি হতে পারে বলে সতর্ক করেন ড. রাশেদা। করোনা পরিস্থিতির কারণে সরবরাহ ও চাহিদা শৃঙ্খলা উভয় ক্ষেত্রে একযোগে বিঘ্ন ঘটছে বলে নিজ পর্যবেক্ষণের কথা জানান কসমস ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এনায়েতউল্লাহ খান। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন কসমস ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এনায়েতউল্লাহ খান।
ইত্তেফাক/আরআই
সূত্রঃ দৈনিক ইত্তেফাক