this is caption
দূর্নীতি, অনিয়ম, স্বজনপ্রীতি ও অদক্ষ কর্মকর্তায় পরিবেষ্টিত দেশের ক্রীড়াঙ্গন থেকে দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি দূর করতে এবং দক্ষ কর্মকর্তাদের যোগ্যতার ভিত্তিতে স্বপদে বহাল করার দাবি জানিয়েছে অরাজনৈতিক আন্তর্জাতিক ক্রীড়া সংগঠন ‘সেভ দ্য স্পোর্টস’। বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এ দাবি জানায়।
ক্রীড়া সংগঠনটি আত্মপ্রকাশ করে ২০১৩ সালের মার্চে। ইতোমধ্যে সংগঠনের পাঁচটি শাখা খোলা হয়েছে বিশ্বজুড়ে। এর মধ্যেই জার্মানি, ফিনল্যান্ড, মালয়েশিয়া, কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রে তাদের শাখা রয়েছে। এছাড়া যুক্তরাজ্যসহ অন্যান্য দেশে সেভ দ্য স্পোর্টসের শাখা খোলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তাদের কাজ ক্রীড়াক্ষেত্রে সব দুর্নীতি জনসমক্ষে প্রকাশ করা।
সাম্প্রতিক সময়ে ক্রীড়াঙ্গনে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে দাবি করা হয় সংবাদ সম্মেলনে। এ সময় স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের অধিনায়ক এবং এসংগঠনের আহবায়ক জাকারিয়া পিন্টু, সদস্য সচিব দিলদার হাসান দিলু, মোহামেডান ক্লাবের স্থায়ী সদস্য ও বিএনপির সাবেক সাংসদ খায়রুল কবির খোকন ও মোহামেডান ক্লাবের পরিচালক প্রতাপ শংকর হাজরা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সদ্যসমাপ্ত আইসিসি টি২০ বিশ্বকাপ আয়োজনে ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়ম হয়েছে বলে উল্লেখ করেন সেভ দ্য স্পোর্টস সদস্য সচিব দিলদার হাসান দিলু। তিনি বেশ কিছূ বিষয় তুলে ধরেন-
১. টি২০ বিশ্বকাপ উপলক্ষে ঢাকা শহরের সৌন্দর্যবর্ধনে ১১৩ কোটি টাকা বাজেট প্রণয়ন করা হয়। কিন্তু পুরো শহর ঘুরে ২০ কোটি টাকারও কাজ পাওয়া যায়নি। যেসব কাজ করা হয়েছে, সেগুলোও নিম্মমানের ইট ও বাথরুমের টাইলস দিয়ে করা।
২. সরকার যে ১০০ কোটি টাকা চাঁদা তুলেছে বিশ্বকাপকে ঘিরে ওই টাকা কোথায় ব্যয় করা হয়েছে, তার ব্যাপারে জনগণ জানতে চায়।
৩. আইসিসি টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের নাম করে ভিনদেশের যে সংস্কৃতিচর্চা বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) করেছে সেটা ন্যাক্কারজনক।
৪. উদ্বোধনী অনুষ্ঠান করতে গিয়ে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের এ্যাথলেটিক ট্রাকের যে ক্ষতি হয়েছে সেসব দায়িত্ব কে নেবে? প্রায় ৬০ লাখ টাকা সম্পদ নষ্ট করার অধিকার বিসিবির নেই।
৫. বিশ্বকাপে জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত ক্রীড়াবিদদের গ্যালারির টিকেট দিয়ে অপমান করা হয়েছে। স্বাধীনতার এতো বছর পরও সরকার তাঁদের মূল্যায়ন করেনি। বরং নানা কর্মকাণ্ড করে অপমান করেছে। স্বাধীনতার পদক দিতে বিদেশীদের ডেকে আনা হলেও স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সদস্যর স্বাধীনতা পদক দেয়া হয়নি। অথচ স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল স্বাধীনতার সময় ৫ লাখ রূপি অনুদান দিয়েছিল মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য।
৬. টি২০ বিশ্বকাপ কাভার করার অধিকার সব ক্রীড়া সাংবাদিকদের থাকলেও তাদের এ্যাক্রিডিটেশন কার্ড ও টি২০ বিশ্বকাপের সৌজন্য টিকেট বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) পরিচিত লোকদের দিয়ে চরম র্দুর্নীতি করেছে। বিসিবি এসব সৌজন্য টিকেট তাদের কর্মচারীদের মাধ্যমে বিক্রয় করে ব্যবসা করেছে।
৭. বগুড়ায় স্টেডিয়াম থাকার পরও তাড়াহুড়া করে কক্সবাজার স্টেডিয়াম তৈরি করে দুর্নীতি করেছে বিসিবি।
৮. আগের আসরে যেসব ক্রীড়াবিদ কমনওয়েলথ ও এশিয়ান গেমসে সফল হয়েছে তারা এবার তালিকায় নেই! অলিম্পিকের কর্মকর্তারা ইচ্ছে অনুযায়ী এবারের তালিকা করেছে।
সংগঠনের আহবায়ক জাকারিয়া পিন্টু বলেন, “ক্রীড়াঙ্গনে দুর্নীতি এবং অপশাসন রোধে এ সংগঠন সারাদেশে সভা, সেমিনার, সিম্পোজিয়াম করে গণচেতনা সৃষ্টি করবে। দেশের সকল স্তরের ক্রীড়াবিদদের নিয়ে বিভিন্ন স্থানে কর্মশালার আয়োজন করবে। আন্তর্জাতিক অলিম্পিক এ্যাসোসিয়েশন (আইওসি)।”
তিনি আরো বলেন, “এ কর্মসূচি বাস্তবায়ন হলে দেশের লোকজ খেলাধুলার চর্চা বাড়াতে উৎসাহিত করবে। প্রয়োজনে তাদের সহায়তা প্রদান করা হবে। এ সংগঠন দেশের দুস্থ ক্রীড়াবিদ ও ক্রীড়া সংগঠকদের সাহায্য ও সেবায় কাজ করবে। প্রতি বছর ক্রীড়া ক্ষেত্রে অবদান রাখা ৬ বিশিষ্ট ক্রীড়াবিদ, ২ ক্রীড়া সংগঠক ও ২ ক্রীড়া সাংবাদিককে আজীবন সম্মাননা প্রদান করা হবে।”
ইয়া/